রবীন্দ্র-আলোকে ললিত ভারতী—সমীপেষু দাস

Image
  রবীন্দ্র-আলোকে ললিত ভারতী কাব্যসরস্বতী কোনো মন্দিরের বন্দিনী দেবতা নন                                                                                                       ( মধুমঞ্জরি, বনবাণী )                        রবীন্দ্রনাথ কাব্য ও সংগীতকে কখনওই পৃথক ব’লে ভাবতেন না। প্রথম জীবনের তাঁর কাব্যগুলির নামকরণ-ই তার যথাযথ প্রমাণ – সন্ধ্যাসংগীত, প্রভাতসংগীত, ছবি ও গান, কড়ি ও কোমল  ইত্যাদি। এমনকি যে কাব্যের জন্য তিনি নোবেল পুরস্কার পান; তা-ও গীতাঞ্জলি। তাঁর রচিত অসংখ্য কবিতা-ই গানের রূপ পেয়েছে। ব্যক্তিজীবনে তিনি তাঁর কাব্যরচনার প্রেয়সীরূপে পেয়েছিলেন তাঁর ‘নতুন বৌঠান’ তথা কাদম্বরী দেবী-কে। তিনি যখন জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে আসেন; তখন বয়সে তিনি বালিকা। তাই সেই ছবিই পরবর্তীত...

মাতৃরূপেণ—৭, বিচিত্ররূপে শক্তি আরাধনা—দিব্যেন্দু মণ্ডল

     বিচিত্ররূপে শক্তি আরাধনা

শ্রী দিব্যেন্দু মণ্ডল (কীর্তনীয়া ও অধ্যাপক) ঝোড়ামাঠ। বীরভূম। 

বিশ্বপ্রসবিনী ভগবতী, যিনি তন্ত্রের আদ্যাশক্তি; তিনিই আবার বাঙালির মননে , সাধন-ভজনে ,জায়া-জননী-কন্যা রূপে আবির্ভূতা। তাই তো শক্তি আরাধনায় সপরিবারে একই চালচিত্রে মাতৃরূপে পূজিত দেবী আবহমান কাল থেকে বাংলার ঘরে ঘরে। তবে প্রতীকবাদী সনাতন ধর্মে দুর্গা কাঠামোয় ত্রি-শক্তির আরাধনাই প্রধান ।

মানবজীবনে এই তিন প্রকার শক্তির অর্চনা তাই দুর্গা, মহিষাসুর ও সিংহের মধ্যে প্রতীকায়িত হয়েছে। দুর্গা রূপের মধ্যে শক্তির সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়, অর্থাৎ বহুপ্রকার দৈবশক্তি একত্রীভূত হয়ে দুর্গা রূপের পরিকল্পনা। জীবনে চলার ক্ষেত্রে এই প্রকার সমন্বয়িত শক্তির আরাধনাই মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। আবার সিংহের মধ্যে শক্তি সুপ্ত আকারে রয়েছে। এ যেন নিহিত শক্তি। বাচ্চা জন্ম নিয়ে কাঁদতে পারে, ক্ষুধা-তৃষ্ণা বুঝতে পারে যে শক্তির কারণে, তা না থাকলে তো জীবন নিঃশক্তিক হয়ে পরে। আর এর কারণেই তো সিংহ নিহিত শক্তির প্রতীক রূপে আরাধিত দুর্গা কাঠামোয়। অর্জিত শক্তির প্রতীক মহিষাসুর পূজিত হন মা মহাশক্তির পদতলে। জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে শক্তি অর্জনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তবে বিশেষভাবে লক্ষণীয়, অর্জিত শক্তির অপব্যবহারেই অসুরের এই পরিণতি—তাও যেন সাবধানবাণীর মতোই মূর্ত মানবের সাধনায়। এই ভাবেই অর্জিত শক্তি, নিহিতশক্তি ও সমন্বয়িত শক্তির ত্রি-ঐক্য ঋষি কল্পনায়—অনুভবে রূপপরিগ্রহ করছে দুর্গা কাঠামোয়। জ্ঞানে-অজ্ঞানে ঋষি-মুনি-সাধারণ জনমানসে তাই তো দেবী “শক্তিরূপেণ সংস্থিতা”

Comments

  1. অপূর্ব ব্যাখ্যা। খুব ভালো লাগলো আর আমার বন্ধু হিসাবে গর্ব অনুভব হয়।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

মাতৃরূপেণ—১২, 'অন্নপূর্ণে সদাপূর্ণে....'—শ্রীজীবশরণ দাস

কালীকথা-৩—পরমব্রহ্ম শবরূপ তাই — ড. অর্ঘ্য দীপ্ত কর

মাতৃরূপেণ—৫, বঙ্গ-মননে পরিবার-সমন্বিতা দুর্গা দর্শন—রাধাবিনোদ ঠাকুর